আইয়ুবুর রহমান তৌফিক
শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ গাজীপুরের সবচেয়ে বড় সরকারি হাসপাতাল। ৫০০ শয্যার এ হসপিটালে তৈরী হয়েছে ১৫ তলায় ভবন সহ অনেক অবকাঠামো। কিন্তুু সেবার মান কেমন ? তা আপনি গেলেই বুঝবেন।
প্রসূতি বিভাগ হাসপাতালের সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ একটি বিভাগ। গাজীপুরের অনেক শ্রমজীবী গর্ভবতী নারীরা ডেলিভারির জন্য এখানেই ভর্তি হয়।তাছাড়া গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পরই দেখবেন নানা টেষ্ট দিবি যেগুলো হাসপাতালের আশপাশের ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করাতে হবে। টেষ্ট করাতে গলাকাটা দাম নিবে।
ওয়ার্ডে গিয়ে নার্সের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম।রোগীর কোন কিছু দরকার পড়লে নার্সকে বারবার ডাকার পর আসবে।তারচেয়ে বড় যে সমস্যা সেটা হলো রাতে সেখানে ডেলিভারি প্যাসেন্ট এর সার্জারি করা হয় না। রাতে যদি প্রসব বেদনা ওঠে অথবা কোন রোগীর সিজার করা দরকার পড়ে.. তারা বলবে বন্ড সই দেন বাচ্চার ক্ষতি হলে হসপিটাল দায়ী না সার্জারি করা হবে সকালে...আর যদি এখানে না রাখেন ঢাকা মেডিকেল রেফার্ড করে দেই সেখানে ২৪ ঘন্টা সার্জারি করা হয়।
সবচেয়ে গুরুতর যে অভিযোগ সেটা হলো নার্সদের সাথে দালালদের লিংক।নার্সরা রোগীদের রাত হলেই বুঝায় রোগীর অবস্থা ভালো না বেশি সিজার করাতে হবে বা নানান কথা বলে প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো সাজেস্ট করে।কার্ড দেয়। আর দালাল রা ওয়ার্ডে পর্যন্ত ডুকে রোগীর লোকদের বুঝায় তার ক্লিনিকে যেতে।রাতেই সার্জারি করবে।৩০ মিনিটে সুস্থ বাচ্চা দিবে।এমন নানা কথা বলে নার্স আর দালাল রোগী হসপিটাল থেকে বের করে ক্লিনিকে নেয়। ডাক্তারের যোগসাজশ আছে কি না তা প্রমাণ না পেলেও নার্সদের ঘটনা সরাসরি প্রমাণিত।তারপর গ্রাম থেকে আসা এসব মানুষদের ছয় নয় বুঝিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে বিল তোলা হয় ২৬-২৭ হাজার টাকা।
তা না দিয়ে রোগী নিতে পারবেন না।একবার ভাবুন দরিদ্র পরিবার টি সরকারি তে গিয়েছিলো সেবা নিতে দালাল তাকে কোথায় নিয়ে গেছে।আর প্রাইভেট ক্লিনিক গুলো তে রাতে এসে সিজার করেন তারা সরকারি মেডিকেলের ই ডাক্তার।জানিনা তাজউদ্দিন মেডিকেলে প্রসূতি ওয়ার্ডে রাতে কতজন ডাক্তার থাকেন।দুজন পেয়েছি একজন ডাক্তার একজন ইন্টার্ন ডাক্তার।
এই যে দালালের দৌরাত্ম্য এইটা যদি বন্ধ না করা হয় যত অবকাঠামো আর যত যন্ত্রপাতি ই আনেন না কেনো মানুষ সেবা পাবে না।প্রাইভেটে ক্লিনিকে প্রায়ই রো গীর মৃত্যু হয়। হসপিটাল ভাংচুর হয় এমন খবর প্রায়ই শোনা যায়।ঢাকায় মাইন্ড এইড হসপিটালে যে পুলিশ কর্মকর্তা মারা গেছেন তিনিও সরকারি মেডিকেলে সেবা না পেয়ে ওখানকার পরামর্শে বেসরকারিতে গিয়েছিলেন।এই যে দালালি তা বন্ধ করার সময় এখনি।যদি শিশুমৃত্যু মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে চান তাহলে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে সরকারি হসপিটালে সেবার মান বাড়ান।আইয়ুবুর রহমান তৌফিক এর ফেসবুক আই ডি থেকে সংগৃহীত -